সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ সীমান্তে ২৩টি ভারতীয় গরু জব্দ দিরাইয়ে তিন ভাগে বিভক্ত বিএনপি শীঘ্রই একটি নির্দিষ্ট সময় হাওরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে : উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ঈদে মিলাদুন্নবীর গুরুত্ব ও তাৎপর্য সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো অবৈধ স্থাপনা দিরাইয়ে বিএনপি’র শোভাযাত্রায় নেতাকর্মীদের ঢল দিরাইয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩ দুই ছাত্রীকে অপহরণ, নির্যাতন ও ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

ধীরে ধীরে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধির ইচ্ছা, শীর্ষে শেখ হাসিনার বিকল্প ভাবছে না দল

  • আপলোড সময় : ২৬-০৪-২০২৫ ১১:৫১:৩৫ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৪-২০২৫ ১২:০০:৪১ পূর্বাহ্ন
ধীরে ধীরে আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধির ইচ্ছা, শীর্ষে শেখ হাসিনার বিকল্প ভাবছে না দল
*দেশে থাকা কাউকে এখনই মুখপাত্র করা হবে না, কর্মসূচি তৈরিতে নিরাপত্তায় অগ্রাধিকার

*আওয়ামী লীগ ক্রমেই মিছিল বড় করতে চায়

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামো ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। ৫ আগস্টের বিপর্যয়ের ধাক্কায় কিছু সময় স্থবির থাকার পর একপর্যায়ে দলটি কেন্দ্রীয় কিছু কর্মসূচি পালন শুরু করে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে।

প্রথম দিকে এতে উপস্থিতি ছিল নিতান্ত হাতে গোনা। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মিছিলের আকার বাড়ার পাশাপাশি সংখ্যাও বাড়ছে। দলের কয়েকজন নেতা বলেছেন, তাঁদের ‘সাংগঠনিক পুনর্গঠন’ চলছে এবং কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরি হওয়ায় মিছিলগুলোতে অংশগ্রহণ বাড়ছে।
দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম এ সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ধরেই আগাচ্ছি। আস্তে আস্তে আমাদের আন্দোলনের তীব্রতা বাড়বে। তবে আমরা তো নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে পারছি না। নিরাপত্তার বিষয়টা অগ্রাধিকারে রেখেই আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়ন করছি। আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর বর্তমানে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল হয়েছে। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পর্যায়ক্রমে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে মিছিল হচ্ছে। একাধিক কর্মী জানিয়েছেন, এসব মিছিলের সমন্বয় দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেই করছেন।

সর্বশেষ গত শুক্রবারও রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল করার খবর পাওয়া গেছে। মিছিলে অংশ নেওয়ায় এর আগের দুদিনেই রাজধানী থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সঙ্গে যুক্ত কয়েকটি সংগঠনের অন্তত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০ এপ্রিল রাজধানীর একাধিক জায়গাসহ দেশের কয়েকটি জেলায় ঝটিকা মিছিল করেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। এর আগে ১৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্নার নেতৃত্বে এবং ১৫ এপ্রিল রামপুরায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাজহার আনামের নেতৃত্বে মিছিল হয়।
৬ এপ্রিল রাজধানীতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের নেতৃত্বে মিছিল হয়। পরে মুরাদকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রাম মহানগরেও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা একাধিক মিছিল করেছেন।
যুবলীগের সম্পাদকমন্ডলীর এক নেতা বলেন, যাঁরা মিছিল করছেন তাঁদের নেত্রী (দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা) নিজেই সংগঠিত করে দেন। মিছিলকারীরা সরাসরি ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে মিছিল করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, দলের ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া নেতৃত্ব আস্তে আস্তে রি-অর্গানাইজড (পুনর্গঠিত) হচ্ছে, অনেকখানি গুছিয়ে এসেছে। সংগঠন গুছিয়ে আসার কারণে সমন্বয় করা যাচ্ছে। যে কারণে কর্মসূচিতে কর্মীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। আগামী দিনে আরও ভালো হবে। নিয়মিত যোগাযোগ করছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ ও দলটির একাধিক সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। হোয়াটসঅ্যাপ-টেলিগ্রামে গ্রুপ কলেও তিনি কথা বলেন।
এসব বৈঠক অনেক সময় দুই-তিন ঘণ্টাব্যাপীও চলে। জানা গেছে, শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিটি জেলার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। নেতা-কর্মীরা বলছেন, আওয়ামী লীগের দেশে থেকে যাওয়া যেসব নেতা-কর্মী মিছিল-মিটিং করতে পারবেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন শেখ হাসিনা। বিভিন্ন মাধ্যমে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টাও হচ্ছে। তবে আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য বলেই দাবি।
ছাত্রলীগের এক সহসভাপতি বলেন, যাঁরা ঢাকায় থাকেন, তাঁদের মিছিলে আসার জন্য সর্বোচ্চ রিকশা বা অটোরিকশা ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করি। সব দিনই যে টাকা দিতে পারি, এমন না। আবার যাঁরা এসব মিছিলে আসেন, তাঁদের তেমন প্রত্যাশাও থাকে না। দলকে ভালোবেসেই বেশির ভাগ কর্মী মিছিলে আসেন।
বড় মিছিলের প্রত্যাশা : রাজধানীর অনেক মিছিলেই যোগ দেওয়া আওয়ামী লীগের এক কর্মী বলেন, আমাদের আরও কিছু বড় কর্মসূচি হবে। মিছিলের আকার বাড়বে। শুরুর দিকে আমাদের মিছিলে লোক থাকত ১৫-২০ জন। এখান তা ১০০ জনে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা বলেন, ঢাকায় মিছিল-মিটিং করতে পারবে - এমন অনেক গ্রুপ আছে। প্রতি গ্রুপেই শতাধিক নেতা-কর্মী রয়েছেন। আগামী মাসে ঢাকায় হাজারখানেক নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে আমাদের অবস্থান জানান দিতে চাই। দায়িত্বে নতুন মুখের পরিকল্পনা নেই : দেশের রাজনীতিতে ‘রিফাইন্ড (সংশোধিত) আওয়ামী লীগ’ নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে।
এ নিয়ে ছাত্র-তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির একাধিক নেতার বক্তব্যে দেশের রাজনীতিতে বেশ আলোড়ন উঠেছিল। বলাবলি হয়েছিল, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর মতো আওয়ামী লীগের অপেক্ষাকৃত ভালো ভাবমূর্তির নেতাদের দলের দায়িত্বে বসানো হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতারা একে দল ভাঙার ষড়যন্ত্র বলেই দাবি করেছেন। দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বলছেন,
কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শেখ হাসিনার হাতেই থাকবে। আর শেখ হাসিনাকে নিচের দিকে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনার অনুরোধ করা হলেও তিনি রাজি হননি।

দলের শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তনের গুঞ্জন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, শেখ হাসিনাই নেতৃত্ব দিচ্ছেন এবং শেখ হাসিনাই নেতৃত্ব দেবেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির অন্য নেতারাও দায়িত্ব পালন করছেন। মহানগর পর্যায়ের একজন নেতা বলেন, টেলিগ্রাম গ্রুপের আলোচনায় শেখ হাসিনার কাছে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের অনুরোধ করা হয়েছিল।
জবাবে তিনি বলেছেন, এখন কাউকে দলীয় পদে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব দিলে, সে ‘জেলে পচে মরবে’। নেতা-কর্মীরা এখন লুকিয়ে থাকতে পারছেন, তখন তা-ও পারবেন না। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ভেতরে যাঁরা সাহস নিয়ে এগিয়ে এসে দলকে সংগঠিত করার কাজে নেতৃত্ব দেবেন, তাঁরাই হবেন নেতা। নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করতে দেশের ভেতরে থাকা নেতাদের মধ্যে কাউকে মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়েও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে আলোচনা আছে। কিন্তু গ্রেপ্তার, মামলার আশঙ্কায় আপাতত সে পথেও হাঁটছে না দলটি। দলটির দাবি, ইতিমধ্যেই ঢাকা থেকে শুরু করে গ্রামপর্যায় পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, দেশে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্য থেকে কেউ মুখপাত্র হবেন কি না, সংগঠনের কাজ পরিচালনা করবেন কি না - সেই পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যখন হবে, তখন দেখা যাবে। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। -আজকের পত্রিকা

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ

৩ দিন ধরে নিখোঁজ, নদীতে মিলল জমিয়ত নেতার মরদেহ